সিবিএন প্রতিবেদন:
স্বৈরাচারী শাসনের উৎপত্তি বন্ধ করতে হলে দেশে একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “সরকার ব্যবস্থা যদি সত্যিকার অর্থে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করে এবং তার মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা করে, তাহলে স্বৈরাচারের উৎপত্তি থেমে যেতে পারে।”

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “শুধু নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করলেই রাষ্ট্রে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে উঠবে না। আমাদের প্রয়োজন চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো। নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইনসভা প্রত্যেকেই যেন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে। এটাই হচ্ছে ‘সেপারেশন অব পাওয়ার থিওরি’, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।”

তিনি আরও বলেন, “বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচনকালীন সময়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গঠন করতে হবে।”

রাষ্ট্রীয় সংস্কারে বিএনপির অবস্থান

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা বলেছি—একজন ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এটাই স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ রোধের অন্যতম পথ। আমরা এমন সংস্কার চাই যাতে কোনো বিভাগের ক্ষমতা খর্ব না হয় বরং সেগুলো একে অপরের জন্য পাহারাদারের ভূমিকায় থাকে।”

তিনি বলেন, “সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে আমরা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এমপিদের গোপন ব্যালটে স্বাধীনভাবে ভোটদানের সুযোগের কথা বলেছি। এটা আরেকটি বিপ্লবের সূচনা।”

শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য সমন্বিত কাঠামো প্রয়োজন

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “নির্বাহী বিভাগে কেউ স্বৈরাচার করেছিল বলে আজ আমরা সেই বিভাগ বিলুপ্ত করতে পারি না। সংসদীয় পদ্ধতিতে কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল বলে আইনসভাকে দুর্বল করা যাবে না। বরং তিনটি বিভাগের মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা একে অপরকে নিয়ন্ত্রণ না করেও পাহারা দিতে পারে। এটাই একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর ভিত্তি।”

তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “আমরা এমন রাষ্ট্রব্যবস্থা চাই, যেখানে গণতন্ত্রের মাধ্যমে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন সম্ভব হবে। সেজন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং সাংবিধানিক সংস্কার।”